ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২২ জ্বিলকদ ১৪৪৬

কী আছে দেশের একমাত্র টাকা জাদুঘরে?

দি ব্যাংকার ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫:১৩, ৮ মে ২০২৫ | আপডেট: ২১:১৯, ৮ মে ২০২৫

কী আছে দেশের একমাত্র টাকা জাদুঘরে?

প্রাচীন আমল থেকে এই ভূখণ্ডে প্রচলিত প্রায় সব মুদ্রা সংগ্রহ করে তা দিয়ে সাজানো হয়েছে দেশের একমাত্র টাকার জাদুঘর। বাংলাদেশ এবং সারাবিশ্বের অতীত ও বর্তমান মুদ্রার ইতিহাস সংরক্ষণ, মুদ্রার ঐতিহ্য ও বিকাশের ক্রমধারা সবার কাছে উপস্থাপনের লক্ষে ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের প্রথম টাকা জাদুঘর (Taka Museum) প্রতিষ্ঠা করে।

রাজধানী ঢাকার মিরপুর দুই নম্বর সেক্টরে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির দ্বিতীয় তলায় টাকা জাদুঘরের অবস্থান।

টাকা জাদুঘরের দেয়ালে সাজানো আছে রঙ-বেরঙের নকশায় সজ্জিত বৈচিত্র্যময় টাকার সংগ্রহ। প্রাচীন আমল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই অঞ্চলে প্রচলিত প্রায় সকল ধরণের মুদ্রা দেখতে পাবেন এই জাদুঘরে।

এছাড়া ডিজিটাল কিয়স্ক, ডিজিটাল সাইনেজ, এলইডি টিভি, থ্রিডি টিভি, ফোটো কিয়স্ক, প্রোজেক্টর এবং স্যুভেনির শপ স্থান পেয়েছে এই জাদুঘরে।

দুটি গ্যালারিতে বিভক্ত জাদুঘরের প্রথম অংশে উপমহাদেশের বিভিন্ন সময়ের প্রচলিত মুদ্রা দেখতে পাবেন। ভারতীয় উপমহাদেশে মুদ্রা ব্যবহারের বিবর্তনের ইতিহাসের সচিত্র উপস্থাপন যেন প্রথম গ্যালারির শোকেসগুলো। খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে ব্যবহৃত ছাপাঙ্কিত রুপার মুদ্রা রয়েছে প্রথম শোকেসে। এভাবে খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতক থেকে দ্বিতীয় শতকে ব্যবহৃত কৃষাণ মুদ্রা, সপ্তম শতক থেকে নবম শতকে ব্যবহৃত হরিকেল রূপার মুদ্রা, দিল্লির সুলতানি আমলের মুদ্রা, বাংলার স্বাধীন সুলতানদের রাজত্বের সময় ব্যবহৃত মুদ্রাসহ ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমল হয়ে বাংলাদেশি মুদ্রা রাখা কাঁচের ঘরে।

দ্বিতীয় গ্যালারীতে আছে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সংগ্রহ। গুপ্তযুগ ও গুপ্তযুগ পরবর্তী মুদ্রা, হরিকেল রাজ্যে প্রচলিত রৌপ্য মুদ্রা এবং প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা কড়িসহ বিভিন্ন যুগের মুদ্রার পাশাপাশি প্রথম গ্যালারির শেষ প্রান্তে ডিওরমার মাধ্যমে বাংলার মুদ্রা বিনিময় ও সঞ্চয়ের পদ্ধতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

দ্বিতীয় গ্যালারিতে বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশের প্রায় ৩ হাজার পুরাতন মুদ্রা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর এই প্রক্রিয়া এখনো চলমান। মুদ্রার পাশাপাশি টাকা জাদুঘরে প্রাচীন মুদ্রা নির্মিত অলঙ্কার, মুদ্রা সংরক্ষণের কাঠের বাক্স, লোহার তৈরি ব্যাংক, লোহার সিন্ধুক ইত্যাদি প্রদর্শনের জন্য রাখা আছে। 

চাইলে এই জাদুঘরে ৫০ টাকার বিনিময়ে এক লাখ টাকার বিনিময় অযোগ্য স্মারক নোটে নিজের ছবি ছাপাতে পারবেন। 

মজার ব্যাপার হলো টাকা জাদুঘরে প্রবেশের জন্য কোন অর্থ ব্যয় করতে হয় না।

টাকা জাদুঘর পরিদর্শনের সময়সূচী

টাকা জাদুঘর প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। শুধুমাত্র শুক্রবার জাদুঘর খোলা থাকে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এবং অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন টাকা জাদুঘর বন্ধ থাকে।

কিভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকার যেকোন স্থান থেকে মিরপুর ২ নম্বর সেক্টরে এসে রিকশা বা পায়ে হেঁটে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাছে যাবেন। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত টাকা জাদুঘর পৌঁছাতে পারবেন।

এএ
 

 

দি ব্যাংকার ডেস্ক

আরও পড়ুন