ঢাকা, শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫

৬ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ সফর ১৪৪৭

মোংলা বন্দরে ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ

ব্যাংকার প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২১:৩২, ১৮ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ২১:৩২, ১৮ আগস্ট ২০২৫

মোংলা বন্দরে ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় এবং এক কোটি ২০ লাখ টনেরও বেশি পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (এমপিএ)। এই সময়ে প্রায় ৯০০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ বন্দরের জেটিতে নোঙর করবে বলে আশা।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান সামুদ্রিক কেন্দ্র হিসেবে মোংলাকে গড়ে তুলতে বন্দরটিতে ব্যাপক রূপান্তর প্রক্রিয়া চলছে। শক্তিশালী আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ও সম্প্রসারণ উদ্যোগের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের চিন্তাভাবনার অংশ হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এমপিএ উপ-পরিচালক (মিডিয়া) মো. মাকরুজ্জামান জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোংলা বন্দর ১ কোটি ৪ লাখ টন পণ্য পরিবহন করে ৩৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে নতুন রেকর্ড গড়েছে। সে সময় বন্দরের মুনাফা দাঁড়ায় ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা নির্ধারিত ২০ কোটি ৫০ লাখ টাকার তুলনায় ২০৩.৪৯ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪৮ দিনে (১৭ আগস্ট পর্যন্ত) মোংলায় ১০৩টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙর করেছে এবং তারা প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য হ্যান্ডেল করেছে। এর মধ্যে আটটি জাহাজ ৫ হাজার ৩৩২ টিইইউ কনটেইনার পণ্য বহন করেছে। শুধু জুলাই মাসেই মোংলা বন্দর ৪ হাজার ৪৫৯ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেল করেছে, ৫১৮টি পুরান গাড়ি আমদানি হয়েছে এবং ৬.৫ লাখ টন পণ্য প্রক্রিয়াকরণ করেছে।

মোংলা বন্দরের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- চ্যানেল খনন, কনটেইনার টার্মিনাল সম্প্রসারণ এবং শুল্ক ও বন্দর কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন। এসব উদ্যোগ বন্দরটির কার্যক্রম আরও গতিশীল করছে এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অধীনে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো ও ভুটানের জন্য নির্ধারিত পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে মোংলার ভূমিকা  জোড়ালো হচ্ছে।

এমপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, বন্দরের পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগানো গেলে বছরে দেড় হাজার বিদেশি জাহাজ নোঙর করতে পারবে, এক লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেল, দুই কোটি টন সাধারণ পণ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং ২০ হাজার পুরান গাড়ি ক্লিয়ার করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, এই লক্ষ্যগুলো অর্জিত হলে জাতীয় বাণিজ্য সক্ষমতা যেমন বাড়বে, তেমনি খুলনা-বাগেরহাট অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

বন্দর চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অবকাঠামো আধুনিকীকরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক লজিস্টিকস হাব হিসেবে মোংলার পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো।

কৌশলগত অবস্থান এবং ক্রমবর্ধমান সক্ষমতার কারণে মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে, যা দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের জট কমিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক উন্নয়নে সহায়তা করছে।

নির্বিঘ্ন কার্যক্রম নিশ্চিত করা  এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বন্দর ব্যবহারকারী শিপিং এজেন্ট, সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট, স্টিভেডরস এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়মিতভাবে বৈঠক করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ,

মোংলা বন্দরে জাহাজ নোঙর বাড়ানো ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ ব্যবসা উন্নয়ন স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ইতোমধ্যে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।

এএ

ব্যাংকার প্রতিবেদন

আরও পড়ুন