ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২২ জ্বিলকদ ১৪৪৬

স্বাধীন বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যাত্রা

ব্যাংকার খবর

প্রকাশ: ১৯:৫৬, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ২০:১২, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

স্বাধীন বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যাত্রা

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে বর্তমান বাংলাদেশ একটি দায়ক্লিষ্ট সম্পদবিহীন জরাজীর্ণ ব্যাংক ব্যবস্থার উত্তরাধিকার লাভ করে। এরকম একটি বিধ্বস্ত ব্যাংক ব্যবস্থাকে সংস্কারের প্রয়োজনে এবং অতীতের বিভিন্ন আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে বাস্তবরূপ দানের লক্ষ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠনের কাজ শুরু হয়।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পরে তৎকালীন রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের পক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে দায়িত্ব
পালন করে। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পরে বাংলাদেশে পাকিস্তানের কোনো ‘উত্তরসূরি রাষ্ট্র’ ছিল না। ফলে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের পক্ষে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ ছিল না। আর পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর বা ক্ষমতা গ্রহণের ন্যায় কোনো আনুষ্ঠানিক দাপ্তরিক ঘটনা ঘটেনি, বরং আত্মসমর্পণ ও শত্রুকে পরাস্ত করার এক অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিল। এছাড়া ডিসেম্বরে বিজয় দিবসের পরে দেশ যখন হানাদারমুক্ত, বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত, তখন নির্বাচনী মেনিফেস্টোর বাইরেও কিছু বাস্তব পরিস্থিতির উদয় হয়।

পাকিস্তানি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর উপর পাকিস্তানিদের আর কোনো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যেমন অসম্ভব ছিল; তেমনি কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণহীন ব্যাংক শাখা পরিচালনা করাও দুরূহ ছিল। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত সম্পদ তথা বিদ্যমান ব্যাংকগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনা ও এগুলোকে সাংগঠনিক কাঠামো প্রদান করা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়ায়। সামাজিক আকাঙ্ক্ষা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপ, সকল ষড়যন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে ছয় দফা, এগারো দফা, নির্বাচনি মেনিফেস্টো, গণআন্দোলন সবকিছুর নিরিখে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের অব্যবহিত পরে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত স্বাধীন দেশে জরুরি ভিত্তিতে একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা
হয়।

বিজয়ের আনন্দ, স্বজন হারানোর ব্যথা সব ছাপিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি, উন্নয়ন অবকাঠামো, আর্থিক কাঠামো ও ব্যাংক ব্যবস্থার পুনর্গঠন অপরিহার্য হয়ে পড়ে। অনিবার্যভাবে চলে আসে ব্যাংক জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত।

ব্যাংক-বিমা জাতীয়করণকে পাকিস্তানের জোয়াল থেকে মুক্তি তথা সাধারণ মানুষের উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টির উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ দাবিটি একসময় ব্যাপক জনসমর্থন পায় এবং এ গণদাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূচনাতেই সকল ব্যাংক রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়। অবশ্য ব্যাংক রাষ্ট্রীয়করণের প্রস্তাব কয়েকটি ধারাবাহিক প্রস্তাবের একটি ছিল। বিকল্প অন্য প্রস্তাবসমূহ ছিল-বাঙালিদের মালিকানায় নিয়ে বিদ্যমান ব্যাংকসমূহ পরিচালনা করা, অবাঙালি প্রশাসক নিয়োগ দেয়া, বিদেশি ব্যাংকের হাতে এসব ব্যাংক পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া ইত্যাদি।

তবে বাঙালিদের মধ্যে কারও ব্যাংক কিনে নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সম্পদ ছিল না। তাছাড়া ব্যাংক জাতীয়করণের পেছনে সমাজতান্ত্রিক ভাবদর্শনও কাজ করেছে। তখন এমন বিশ্বাস ঘনীভূত হয়েছিল যে, সম্পদ যদি ব্যক্তির হাতে না থেকে রাষ্ট্রের হাতে থাকে, তাহলে রাষ্ট্রটি একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরে স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বত্র পাকিস্তানি মুদ্রা তথা পাকিস্তানি রুপির ব্যাপক প্রচলন ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মুক্তিযোদ্ধারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাকিস্তানি রুপি ভারতে নিয়ে যায়। এ মুদ্রা তারা ভারতের আগরতলায় প্রশিক্ষণরত মুক্তিযোদ্ধা ও পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত শরণার্থীদের প্রয়োজনে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বহন করে। তখন সারা বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩০ (ত্রিশ) কোটি পাকিস্তানি রুপি ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর মধ্যে, অর্থনীতিবিদ ও প্রাক্তন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ড. আকবর আলী খান হবিগঞ্জের উপ-বিভাগীয় কোষাগার থেকে (উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি হবিগঞ্জের এসডিও ছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন) ৩ কোটি পাকিস্তানি রুপি ভারতে স্থানান্তর করেন। কাজী রকীব উদ্দিন (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোষাগার থেকে), জনাব এইচ টি ইমাম (২১ লক্ষ) ও ড. সা’দাত হোসাইন (প্রায় ১৩ কোটি) প্রমুখ বিভিন্ন পরিমাণ পাকিস্তানি রুপি আগরতলায় স্থানান্তর করেন। সে সময় ভারতে পাকিস্তানি রুপির প্রচলন না থাকায় ব্যবহার করা সমস্যাপূর্ণ ছিল। কলকাতার এজেন্টের মাধ্যমে পাকিস্তানি রুপি ভারতীয় মুদ্রায় রূপান্তরের জন্য আগরতলা থেকে কাবুলে নেওয়া হতো এবং সেখানকার বাজারে তা ভারতীয় মুদ্রায় রূপান্তর করে ভারতে নিয়ে আসা হতো। এটি কোনো স্বচ্ছ প্রক্রিয়া ছিল না। এ ছাড়া সার্বিক প্রক্রিয়াটির পরিচালনাও যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ও সমস্যাসংকুল ছিল।

জানা যায়, উক্ত ৩০ (ত্রিশ) কোটি রুপির মাত্র পাঁচ-ছয় কোটি রুপি ভারতীয় মুদ্রায় রূপান্তর করা সম্ভব হয়েছিল। অবশিষ্ট ২২-২৪ কোটি রুপি অব্যবহৃত রয়ে যায়। নিজস্ব মুদ্রা প্রচলনের পূর্ব পর্যন্ত এদেশে পাকিস্তানি মুদ্রা ব্যবহৃত হতো। উল্লেখ্য, ভারতের সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশে মানচিত্র সম্বলিত প্রথম ১ টাকা এবং ১০০ টাকা মূল্যমানের বাংলাদেশি মুদ্রা ছাপানো হয়। আর ভারত সরকারের দেওয়া ৫০,০০০ পাউন্ড স্টার্লিং ঋণের মাধ্যমে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে খোলা হয় বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠাপরবর্তী সময়ে তদানীন্তন ভারত সরকার কর্তৃক অনুদান হিসেবে প্রদত্ত ৫.০০ মিলিয়ন ডলার (রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বোম্বে শাখায়) ও ১০.০০ কোটি ভারতীয় রুপি (রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কলকাতা শাখায়) সম্বল করে বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুনর্গঠন
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ শত্রুমুক্ত হবার পরে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ডেপুটি গভর্নর (ডিজি) অফিস অর্থাৎ ঢাকা কার্যালয়কেই পূর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়। শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব নয়, পুরো ব্যাংক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের দায়িত্বও জরুরি ভিত্তিতে এ কার্যালয়ের উপর বর্তায়। এটি করতে গিয়ে আইনগত জটিলতার সৃষ্টি হয়। তা দূরীকরণের লক্ষ্যে ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশ (বাংলাদেশ ব্যাংক টেম্পরারি অর্ডার) বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠন করা হয়। 

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে এই আদেশের কার্যকারিতা ধরা হয়। প্রাথমিকভাবে এ আদেশের অধীনে একজন প্রশাসকের উপর বাংলাদেশ ব্যাংক এর দায়িত্ব ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। তখন স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের নির্বাহী পরিচালক মুশফিক-উস-সালেহীনকে সাময়িকভাবে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ এর প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত ভঙ্গুর ব্যাংক ব্যবস্থায় সালেহীন এদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় তাঁর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

১৯৭২ সালের ১৮ জানুয়ারি ‘উত্তরা ব্যাংক’ এর তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এন এম হামিদুল্লাহকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ এর প্রথম গভর্নর নিযুক্ত করা হয়। হামিদুল্লাহর কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালনার অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে তিনি ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশন (উত্তরা ব্যাংক) ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব পাকিস্তান পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ অভিজ্ঞ ছিলেন।

১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের সাথে সাথে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্থাপনের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। তখন স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের বাঙালি কর্মকর্তা চিত্তরঞ্জন ঘোষ এর উপর আঞ্চলিক বাজেট তৈরির দায়িত্ব অর্পিত থাকায় ট্রেজারি লেনদেন পরিচালনার প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম প্রয়োজন হয়। জানা যায় যে, তিনি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম ‘ব্যাংক অব বাংলাদেশ’ প্রস্তাব করেন যা ডেপুটি সেক্রেটারি কামাল আহমেদ সমর্থন করেন।

‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ নামকরণের পূর্ব পর্যন্ত ‘ব্যাংক অব বাংলাদেশ’ নামেই ট্রেজারি লেনদেন করতে থাকে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয়
ব্যাংক। শুরুতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের আদলে ‘স্টেট ব্যাংক অব বাংলাদেশ’ এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এর আদলে ‘ব্যাংক অব বাংলাদেশ’ নামকরণের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বিদেশি ভাষায় বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নামকরণ না করার অভিপ্রায় প্রকাশ করেন।

অর্থাৎ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নামে কোনো বিদেশি ভাষারীতি অনুসরণ করা হবে না বা কোনো বিদেশি ব্যাংকের অনুকরণে এর নাম রাখা যাবে না বলে তিনি নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম হয় ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’। ভাষার নামে দেশ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের যাত্রা শুরু
স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় দিবস ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকেই বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ এর যাত্রা শুরু। ১৯৭১ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশ (বাংলাদেশ ব্যাংক টেম্পরারি অর্ডার) বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠন করা হয়। এই আদেশ ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর বলে ধরা হয়। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ঢাকা শাখার সকল দায় ও পরিসম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। স্বাধীনতাপূর্ব ও মুক্তিযুদ্ধকালীন ক্ষয়ক্ষতি অতিক্রম করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় এবং সমগ্র ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে মুশফিক-উস-সালেহীন ছাড়া আরও যাঁদের আন্তরিকতা, উদ্যোগ ও অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তাঁরা হলেন এ কে এন আহমেদ, সৈয়দ আলী কবির, নুরুল মতিন, এ কে গঙ্গোপাধ্যায়, আমিনুল হক চৌধুরী, এস আর কর্মকার, বি বি দেবনাথ প্রমুখ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম
মনোগ্রাম শুধু একটি প্রতীকচিহ্নই নয় বরং শিল্পীর তুলির স্পর্শে এ প্রতীকচিহ্নের মধ্যে মূর্ত হয়ে ওঠে আমাদের কর্মধারা এবং চিন্তাচেতনার শৈল্পিক রূপ। স্বাধীনতা উত্তর সময়ে বাংলাদেশ সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামে দেশের কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যকে প্রাধান্য দিয়ে সেগুলোকে শৈল্পিক উৎকর্ষে উদ্ভাসিত করে তোলা হয়।

বরেণ্য শিল্পী কামরুল হাসান ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম ডিজাইন করেন। কালের পরিক্রমায় মুদ্রণ ব্যবস্থার পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মনোগ্রামের মূল ডিজাইনে কিছু অনাকাঙ্ক্ষি পরিবর্তন আসে। এ অবস্থায় মনোগ্রামের সঠিক রূপটি নিশ্চিত করে সকল ক্ষেত্রে একই অঙ্কনশৈলীর মনোগ্রাম ব্যবহারের প্রয়োজন অনুভূত হয়।

মনোগ্রামের মূল ডিজাইন পুনরুদ্ধার, রং নির্ধারণ এবং শিল্পী কামরুল হাসান কর্তৃক অংকিত ডিজাইনের নিগূঢ় অর্থ উদ্ভাবনের উদ্দেশ্যে সাবেক নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠিত হয়। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত বিভিন্ন বইয়ে মুদ্রিত মনোগ্রামকে ভিত্তি করে শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার এর সহযোগিতায় সঠিকরূপে মনোগ্রামের কাজ সম্পাদিত হয়।

সূত্র: বাংলাদেশের ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থ

এএ

ব্যাংকার খবর

আরও পড়ুন