ব্যাংকার প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮:১২, ৩ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৮:১২, ৩ মে ২০২৫
২০২৪ সালটি ছিল মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশের জন্য রেকর্ডময় বছর। এ বছর ৩০০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে বিকাশ। শুধু মুনাফাই নয়, প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫,০৫৮ কোটি টাকা, যা গত বছরের চেয়ে ৮৬৭ কোটি বেশি। ২০১১ সালে যাত্রা শুরুর পর বিকাশ কখনোই এত আয় ও মুনাফা করেনি।
সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখান থেকেই এই তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বিকাশের আয় দাঁড়ায় ৫ হাজার ৫৮ কোটি টাকায়। আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে এই পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে আয় বেড়েছে ৮৬৭ কোটি টাকা। শতাংশ হিসেবে যা ২১ শতাংশ বৃদ্ধি। মুনাফার দিক থেকেও বড় সাফল্য পেয়েছে বিকাশ।
২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ছিল ৯৯ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৬ কোটিতে। অর্থাৎ এক বছরে মুনাফা বেড়েছে ২১৭ কোটি টাকা বা ২১৯ শতাংশ। ২০১১ সালে যাত্রা শুরুর পর বিকাশ কখনোই এত আয় ও মুনাফা করেনি।
এর আগে সবচেয়ে বেশি মুনাফা হয়েছিল ২০২৩ সালে। তখন ৯৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। এক বছরে তা তিন গুণ বেড়ে ৩০০ কোটি ছাড়িয়ে যায়।
গত ১০ বছরের তুলনা করলে দেখা যায়, এই সময়ে বিকাশের আয় বেড়েছে ৯ গুণ। ২০১৪ সালে তাদের আয় ছিল ৫৭৩ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৮ কোটিতে। মুনাফার ক্ষেত্রেও একই চিত্র। ২০১৪ সালে মুনাফা ছিল ১৯ কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৩১৬ কোটি। অর্থাৎ মুনাফা বেড়েছে প্রায় ১৭ গুণ।
তিন বছর ধরে বিকাশ ধারাবাহিকভাবে মুনাফা করছে। ২০২১ সালে তারা লোকসান করেছিল ১১৭ কোটি টাকা। এরপর ২০২২ সালে মুনাফা হয় ১৮ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৯ কোটি টাকায়। আর ২০২৪ সালে সেই মুনাফা লাফিয়ে ওঠে ৩১৬ কোটিতে।
তবে আয় বাড়ার ধারাবাহিকতা ছিল আরও আগেই। ২০১৪ সাল থেকে প্রতিবছর বিকাশের আয় বেড়েছে। তবে মুনাফার ধারায় ছেদ পড়ে ২০১৮ সালে। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মুনাফা বাড়লেও, ২০১৮ সালে তা কমে যায়। এরপর ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১—এই তিন বছর লোকসানে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। ২০২২ সাল থেকে আবার মুনাফায় ফেরে বিকাশ।
এ প্রসঙ্গে বিকাশের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মঈনুদ্দিন মোহাম্মদ রাহগীর বলেন, তারা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। ব্যবসা টেকসই করতে বড় পুঁজি বিনিয়োগ করছেন। প্রযুক্তি ও সেবার মান উন্নয়নে কাজ করছেন। গ্রাহক ও অংশীজনদের ডিজিটাল শিক্ষায়ও গুরুত্ব দিচ্ছেন। এই কারণেই বিকাশের আয় ও মুনাফায় স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি এসেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছর বিকাশ কর হিসেবে সরকারকে দিয়েছে ১৮৯ কোটি টাকা। আর ব্যাংকে রাখা আমানতের সুদ বাবদ আয় করেছে ১৯০ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা বিকাশের এখন গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৮ কোটি। সারা দেশে তাদের ৩ লাখ ৩০ হাজার এজেন্ট আছে। মার্চেন্ট পয়েন্ট আছে সাড়ে ৫ লাখের বেশি।
এএ
ব্যাংকার প্রতিবেদন