ব্যাংকার প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২:৩৯, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৪০, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংক এবং প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি (এসএসসি) গঠনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শরিয়াহ কমিটির সদস্যদের মাসিক ভাতাও নির্ধারণ করে দিয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং প্রবিধি বিভাগ।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, শরিয়াহ কমিটির সদস্যদের মাসিক সম্মানী ভাতা ২৫ হাজার টাকা এবং প্রতিটি সভায় উপস্থিতির জন্য সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হবে।
কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ব্যাংককে শরিয়াহ বিষয়ে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও নিরপেক্ষ সদস্য নিয়োগ করতে হবে। কমিটির প্রধান কাজ ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শরিয়াহ নীতি প্রণয়ন করা এবং শরিয়াহ পরিপালন পর্যালোচনা করা। একজন সদস্য সর্বোচ্চ তিনটি প্রতিষ্ঠানের শরিয়াহ কমিটিতে থাকতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শরিয়াহ কমিটির সদস্য নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কামিল, দাওরা-ই-হাদিস, ফিক্হ, ইসলামী স্টাডিজ, আরবি, ইসলামী অর্থনীতি, ইসলামী ফাইন্যান্স বা ইসলামী আইনশাস্ত্রে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রীসহ ফিক্হ বা উসুল আল-ফিক্হ, বিশেষ করে ফিক্হ-আল-মুয়ামালাতে (ইসলামী বাণিজ্যিক আইনশাস্ত্র) সার্টিফিকেট বা ডিপ্লোমা বা অন্য কোনো উচ্চতর ডিগ্রি বা ইফতা ডিগ্রিধারী হতে হবে।
শিক্ষাজীবনে কোনো তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। এ ছাড়া, জাতীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে উপরোক্ত বিষয়ে পিএইচডি বা অন্য কোনো উচ্চতর ডিগ্রি অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
পাশাপাশি কমপক্ষে দুই বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং স্বনামধন্য জার্নাল বা প্রকাশনার মাধ্যমে নিজস্ব অধ্যয়নের ওপর দুটি নিবন্ধ প্রকাশ করা বা ইসলামী ফাইন্যান্স ও ইসলামী ব্যাংকিং বা অর্থনীতি বা ইসলামী আইনশাস্ত্রের ওপর দুটি স্বলিখিত বই বা প্রকাশনা থাকতে হবে।
কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফতোয়া বোর্ড বা শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটিতে অন্তত ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শরিয়াহ, ইসলামি ফাইন্যান্স বা ব্যাংকিং বিষয়ে স্বনামধন্য জার্নালে অন্তত ২টি প্রবন্ধ প্রকাশ অথবা দুটি বই/ প্রকাশনা থাকতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, পরিচালনা পর্ষদ কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে একজনকে সর্বোচ্চ ৩ বছরের জন্য চেয়ারম্যান মনোনীত করবে। ব্যাংকের শরিয়াহ সচিবালয়ের প্রধান কমিটির সচিব হিসেবে কাজ করবেন, তবে তার ভোটাধিকার থাকবে না। সদস্যরা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ সদস্য অপসারণ করতে পারবে। নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে নোটিশ দিয়ে সদস্য পদত্যাগ করতে পারবেন।
কোনো সদস্য কর বা ঋণখেলাপি হলে তিনি কমিটিতে থাকতে পারবেন না। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ফতোয়া প্রদানে তাকে বাধা দেওয়া যাবে না। শরিয়াহ সম্পর্কিত কোনো মতবিরোধ হলে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।
কমিটির মূল কাজ হবে ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শরিয়াহ নীতি প্রণয়ন এবং তার যথাযথ পরিপালন তদারকি।
বছরে অন্তত দুইবার পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির যৌথ সভা করতে হবে।
ব্যাংকার প্রতিবেদন