আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৩ দশক পূর্তি উদযাপন

‘সর্বদাই শরীয়াহ’ স্লোগানকে সামনে রেখে ১৯৯৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক। তিন দশকের পথচলায় দেশের অর্থনীতিতে আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকটি।

এই গৌরবময় মাইলফলক উপলক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও দেশের সকল শাখায় আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রাফাত উল্লাহ খানের পরিচালনায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল ওয়াদুদ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মো. শাহীন উল ইসলাম ও বোর্ড অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান, এফসিএ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যাংকের চেয়ারম্যান খাজা শাহরিয়ার গ্রাহক, শুভানুধ্যায়ী ও অংশীদারদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আপনাদের বিশ্বাস, সহযোগিতা ও ভালোবাসাই ব্যাংকের এই দীর্ঘ যাত্রার মূল প্রেরণা। বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের পর আমরা ব্যাংকে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের যাত্রা শুরু করেছি, যার ভিত্তি কর্পোরেট সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। আমরা দেশের প্রথম ইসলামী ব্যাংক হিসেবে সেন্ট্রালাইজড রিপোর্টিং লাইন বাস্তবায়ন করছি। ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার; এর মাধ্যমে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক সেবা প্রদান করব। ইনশাআল্লাহ, এসব পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক দেশের সেরা ইসলামী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।”

নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “আমাদের ৩০ বছরের অর্জন ও অভিজ্ঞতা এই অনুষ্ঠানের ট্যাগলাইন ‘৩ দশকের বিশ্বাসে, সবসময় আছি পাশে’-এর মধ্যেই প্রতিফলিত। ২২৬টি শাখা, ৮৮টি উপশাখা, প্রায় ৭৫০টিরও বেশি এজেন্ট আউটলেট, প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কর্মীর বিশাল পরিবার, বিজনেস চ্যানেল ও অপারেশনসহ এসবের সম্মিলন একটি বড় অর্জন। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, দেশে অন্যতম বৃহৎ ব্যালেন্সশিটের ব্যাংক হিসেবে আরো এগিয়ে যাব।”

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মো. শাহীন উল ইসলাম বলেন, “একটি প্রতিষ্ঠানের শক্ত হওয়ার সব উপাদান আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে বিদ্যমান। ৩০ বছরে আমরা পরিপক্ক হয়েছি ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এখন আমাদের এগিয়ে যাবার পালা।”

বোর্ড অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল হাছান, এফসিএ বলেন, “একটি ব্যাংকের ৩০ বছর সফলভাবে টিকে থাকা দেশের প্রেক্ষাপটে একটি বড় সৌভাগ্যের বিষয়। সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, সেগুলো অতিক্রম করে আরও পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু করতে হবে।”

ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রাফাত উল্লাহ খান ব্যাংকের সব গ্রাহক, স্টেকহোল্ডার ও কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক তিন দশক সফলভাবে অতিক্রম করেছে। বিগত এক বছরে ব্যাংকে অনেক পরিবর্তন এসেছে এবং ৩০ বছর পূর্তির মধ্য দিয়ে আমরা একটি নবযাত্রা শুরু করেছি। প্রযুক্তি-নির্ভর সেবা, নৈতিক ব্যাংকিং চর্চা ও কল্যাণমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা সবসময় গ্রাহকদের আস্থা পেয়ে চলেছি।”

অনুষ্ঠানে ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. ফজলুর রহমান চৌধুরী, মো. আসাদুজ্জামান ভূঞা, মোহাম্মদ হোসেন, এস. এম. আবু জাফরসহ প্রধান কার্যালয়ের অন্যান্য বিভাগীয় প্রধান, শাখা ও উপশাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ এবং গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীরা ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

তিন দশক ধরে পথচলা ব্যাংকটির বর্তমানে গ্রাহক প্রায় ৪০ লক্ষ এবং সাড়ে ৫৪ হাজার কোটি টাকার আমানত রয়েছে। দেশজুড়ে বিস্তৃত ২২৬টি শাখা, ৮৮টি উপশাখা, ৭৫০টিরও বেশি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ২৫২টি এটিএম ও সিআরএম নেটওয়ার্কসহ আধুনিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম—এআইবি আই-ব্যাংকিং ও ইসলামিক ওয়ালেটের মাধ্যমে গ্রাহকদের যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

এএ