ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

২ শ্রাবণ ১৪৩২, ২১ মুহররম ১৪৪৭

ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

ব্যাংকার প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৪:৫৬, ১১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৫৬, ১১ জুলাই ২০২৫

ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এজেন্ট ব্যাংকিং আমানত সংগ্রহে ২০ হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করে দেশের এই সেক্টরে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। এটি দেশের এজেন্ট ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট আমানতের প্রায় ৪২ শতাংশ এবং এ খাতে সর্বোচ্চ।

সরাসরি ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিযুক্ত এজেন্টের মাধ্যমে সহজে ব্যাংকিং সেবায় অন্তর্ভুক্তি করে আসছে ইসলামী ব্যাংক। ২০১৭ সালে কার্যক্রম শুরু থেকে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকদের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতায় খুব দ্রুত প্রসার লাভ করেছে।

মাত্র নয় বছরের ব্যবধানে ২০ হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম আস্থার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকটি।

এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে দেশের শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে ইসলামী ব্যাংক। বর্তমানে গ্রাহকের সংখ্যা ৫৩ লাখের  বেশি। এর সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো, গ্রাহকদের প্রায় অর্ধেকই নারী। আবার গ্রাহকদের সিংহভাগই গ্রাম এলাকার। এই গ্রাহকরা নির্বিঘ্নে আমানত জমা ও উত্তোলন করছেন যেখানে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ গড়ে প্রায় ১০০০ কোটির বেশি।

এছাড়া, এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে প্রবাসী আয় বিতরণেও রয়েছে আরেকটি বড় সফলতা। বর্তমানে দেশের এজেন্ট ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আহরণে ব্যাংকটি শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ২০২৪ সালে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা, যা এ খাতের মোট রেমিট্যান্সের ৫৪ শতাংশেরও বেশি। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত এই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা।

ব্যাংকের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যরা সহজেই তাদের প্রাপ্য অর্থ উত্তোলন করতে পারছেন। এই সেবা দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয়ের প্রবাহকে শক্তিশালী করছে এবং হুন্ডির মতো অবৈধ চ্যানেল ব্যবহারে গ্রাহকদের নিরুৎসাহিত করছে।

ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং বর্তমানে দেশের ৪৭২টি উপজেলায় ২৭৯১টি আউটলেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এই আউটলেটগুলোর অধিকাংশই প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত, যেখানে ঐতিহ্যগত ব্যাংকিং সেবা পৌঁছানো কঠিন।

প্রতিটি আউটলেট ব্যাংকের শাখা থেকে সরাসরি তত্ত্ববধানে পরিচালনার মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য উচ্চমানের সেবা, আর্থিক নিরাপত্তা ও আস্থার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির  যেমন সেলফিন অ্যাপ, আই-ব্যাংকিং, পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) এবং কিউআর কোডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সুবিধা  গ্রাহকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় ও সহজলভ্য করে তুলেছে।

ইসলামী ব্যাংকের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প (আরডিএস) এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে ১৩৫টি এজেন্ট আউটলেটের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ বিতরণ করা হচ্ছে, যা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থিক ক্ষমতায়ন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সহায়ক হচ্ছে। এই বিনিয়োগ কার্যক্রম গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে।

ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ২০ হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহের সাফল্যের পেছনে রয়েছে বেশ কিছু মূল কারণ। ব্যাংকটির আমানতদারিতা ও শরীয়াহ পরিপালনে একনিষ্ঠতা গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনার প্রতি ব্যাংকের অঙ্গীকার ও স্থানীয় পর্যায়ে এজেন্ট আউটলেটের স্বত্বাধিকারীদের পরিচিতি গ্রাহকদের সাচ্ছন্দ্য বোধ করতে সহায়ক হয়েছে।

এছাড়া, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ব্যয়-সাশ্রয়ী সেবা প্রদান এই সাফল্যকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।-বিজ্ঞপ্তি।

এএ

ব্যাংকার প্রতিবেদন

আরও পড়ুন