ঢাকা, শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫

৬ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ সফর ১৪৪৭

সৎকর্মশীলদের আল্লাহ ভালোবাসেন

ব্যাংকার ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮:৩১, ৩১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১২:৫২, ১৬ আগস্ট ২০২৫

সৎকর্মশীলদের আল্লাহ ভালোবাসেন

প্রতীকী ছবি

মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে নিজের ও অন্যের কল্যাণে করা প্রতিটি কল্যাণকর চিন্তা, কথা, আচরণ ও কাজ হলো সৎকর্ম বা আমলে সালেহ। সৎকর্ম কত রকম হতে পারে তার উদাহরণ আমরা পাই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স)-এর সমগ্র জীবনে। সহীহ হাদিস অনুসারে- মা-বাবার আন্তরিক খেদমত করা, সত্য কথা বলা, পরিবারের ভরণপোষণ, সদাচরণ বা সুন্দর ব্যবহার, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাহায্য, এতিম-মিসকিন ও অসহায়দের লালন, রোগীর সেবা ও তার জন্য দোয়া করা সবই সৎকর্ম। এছাড়াও অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশের শিকার অসহায় মানুষকে পরিবেশের বন্দিত্ব থেকে মুক্ত করা, অত্যাচারিতকে সাহায্য, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ত্রাণ কাজ, প্রকাশ্যে বা গোপনে দান, তৃষিতকে পানি পান করানো, অধীনস্থদের সঙ্গে মানবিক আচরণ, শান্তি স্থাপনে সহায়তা, আল্লাহর পথে ব্যয়, অন্যায়ের প্রতিবাদ, পরিশ্রম ও সততার সঙ্গে কাজ করা, পথ থেকে পথিকের জন্য ক্ষতিকর বস্তু অপসারণ, পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, গাছ লাগানো, মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলা ইত্যাদি সব ভালো ও ইতিবাচক কাজই সৎকর্ম হিসেবে গণ্য।

সৎকর্ম ভালো মানুষের অন্যতম গুণ। সৎকর্মের মাধ্যমেই মানুষের ভেতরের সদগুণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। মানুষের দোষ-গুণ বা ভালো-মন্দের প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই তার কাজকর্ম ও আচার-ব্যবহারের মধ্যে। কাজের মানদণ্ডেই একজন মানুষকে মূল্যায়ন করা হয় এটা যেমন জাগতিকভাবে সত্য, তেমনি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও সত্য ও বাস্তব। সৎকর্মশীলরা দুনিয়ায় যেমন সম্মানিত হন, তেমনি আখিরাতেও। সামিল হন আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের কাতারে।

পবিত্র কুরআনে আমলে সালেহ বা সৎকর্ম সম্পর্কে যা বলা হয়েছে

পূর্ব ও পশ্চিম দিকে মুখ ফেরানোর মধ্যে কোনও কল্যাণ/সৎকাজ নেই; বরং সৎকাজ হলো– মানুষ ঈমান আনবে এক আল্লাহর প্রতি, শেষ দিবসের প্রতি, ফেরেশতাদের প্রতি, আল্লাহর কিতাব ও নবীদের প্রতি; আর তাঁর ভালোবাসায় মাল-সম্পদ দান করবে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, মিসকিন, পথিক-পর্যটকদের, সাহায্যপ্রার্থীদের এবং মানুষকে দাসত্ব থেকে মুক্তির কাজে; আর সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে; তা ছাড়া প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূর্ণ করবে; এবং অর্থসংকট, দুঃখ-কষ্ট ও সত্য-মিথ্যার সংগ্রামে সবর অবলম্বন করবে। মূলত এরাই সত্যবাদী ও মুত্তাকি। (সূরা বাকারা, আয়াত- ১৭৭)

তারা তোমার কাছে জানতে চায়, তারা কী ব্যয় করবে? তুমি বলো: তোমরা উত্তম যা কিছুই ব্যয় করবে, তা করো বাবা-মার জন্য, আত্মীয়-স্বজনের জন্য এবং এতিম, মিসকিন ও পথিক-পর্যটকদের জন্য। আর তোমরা জনকল্যাণে যে কাজই করোনা কেন, আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত। (সূরা বাকারা, আয়াত-২১৫)

যারা নিজেদের ধনসম্পত্তি আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের এই সৎদান এমন একটি শস্যবীজ, যাতে উৎপন্ন হয় সাতটি শিষ আর প্রতিটি শিষে থাকে শত শস্যদানা। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহুগুণ প্রবৃদ্ধি দান করেন। আল্লাহ অনন্ত প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সূরা বাকারা, আয়াত-২৬১)

যারা আল্লাহ্‌র পথে তাদের অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে, তারপর সে ব্যয়ের কথা বলে বেড়ায় না এবং এটা দিয়ে কারও মনেও কষ্ট দেয়না, তাদের পুরষ্কার রয়েছে তাদের প্রভুর কাছে। তাদের কোনো ভয়ও থাকবে না এবং দুঃখ-বেদনাও থাকবে না। (সূরা বাকারা, আয়াত- ২৬২)

যারা ব্যয় করে নিজেদের সম্পদ রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে; তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের প্রভুর কাছে। তাদের কোনো ভয়ও থাকবে না, দুঃখ-বেদনাও থাকবে না। (সূরা বাকারা, আয়াত-২৭৪)

শুভ সংবাদ দাও তাদেরকে, যারা ঈমান আনবে ও আমলে সালেহ করবে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার নিচে নদী উৎসারিত। (সূরা বাকারা, আয়াত-২৫)

যারা ঈমান আনে ও আমলে সালেহ করে, তারা হবে জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে থাকবে তারা চিরকাল। (সূরা বাকারা, আয়াত-৮২)

যারা ব্যয় করে সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায়, যারা রাগ সংবরণকারী এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল—কোমল। আর আল্লাহ তো কল্যাণকামীদেরই ভালোবাসেন। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত-১৩৪)

তোমাদের ভালোবাসার সম্পদ থেকে ব্যয় (দান) না করলে তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করবে না। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় করো আল্লাহ সে বিষয়ে বিশেষভাবে অবহিত। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত-৯২)

আমাদের প্রভু! আমরা শুনেছি একজন আহবায়ককে আহ্বান করছেন ঈমানের দিকে- তোমরা ঈমান আনো তোমাদের প্রভুর প্রতি। (তাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে) আমরা ঈমান এনেছি। আমাদের প্রভু! অতএব আপনি আমাদের ক্ষমা করুন, আমাদের সব পাপ, মুছে দিন আমাদের সব মন্দকর্ম ও ত্রুটি বিচ্যুতি, আর আমাদের ওফাত দান করুন পুণ্যবানদের সঙ্গে। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত-১৯৩)

আর পুণ্য ও তাকওয়ার কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করো (সূরা মায়েদা, আয়াত-২)

আমি তোমাদেরকে যে জীবনোপকরণ দিয়েছি, সময় থাকতেই তা থেকে অন্যের জন্যে ব্যয় করো, যাতে মৃত্যুর মুহূর্তে একথা বলতে না হয়, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আরেকটু সময় দাও, আমি দান করে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হই।’  (সূরা মুনাফিকুন, আয়াত- ১০)

তোমাদের মধ্যে সৎকর্মে কে অগ্রগামী তা পরীক্ষার জন্যই তিনি জীবন সৃষ্টি ও মৃত্যুর ব্যবস্থা করেছেন। (সেইসঙ্গে তোমরা যাতে অনুধাবন করতে পারো) তিনিই মহাপরাক্রমশালী ও সত্যিকারের ক্ষমাশীল। (সূরা মূলক, আয়াত-২) 

হাঁ, যে আল্লাহ্‌র নিকট সম্পূর্ণরূপে আত্মসর্মপণ করে এবং সৎকর্মপরায়ণ হয়, তার ফল প্রতিপালকের নিকট আছে এবং তাদের কোন ভয় নাই ও তারা দুঃখিত হবে না। (সূরা বাকারা, আয়াত- ১১২)

আর যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাহাদেরকে দাখিল করব জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি সত্য, কে আল্লাহ্‌ অপেক্ষা কথায় অধিক সত্যবাদী? ((সূরা নিসা, আয়াত-১২২)

যারা ঈমান আনে এবং আমলে সালেহ করে, তাদের প্রভু তাদের ঈমানের ভিত্তিতে নিয়ে যাবেন সেই নিয়ামতে ভরা জান্নাতের দিকে, নিচে যার প্রবাহিত নহর! (সূরা ইউনুস, আয়াত-৯)

তবে যারা সবর অবলম্বন করে এবং আমলে সালেহ করে তাদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত এবং বিশাল পুরস্কার। (সূরা হুদ, আয়াত-১১)

যারা ঈমান আনে, আমলে সালেহ করে এবং তাদের প্রভুর প্রতি বিনীত হয়ে জীবনযাপন করে, তারাই হবে জান্নাতের অধিকারী, সেখানেই থাকবে তারা চিরকাল। (সূরা হুদ, আয়াত ২২,২৩)

আমি কাউকে তার সাধ্যাতীত ভার দেই না। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতি, সেখানে চিরকাল থাকবে। (সূরা আ‘রাফ, আয়াত- ৪২)

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে- যার পাদদেশে নদী বয়ে যায়। (সূরা ইব্রাহিম, আয়াত-২৩)

সব প্রশংসা আল্লাহরই যিনি তাঁর বান্দার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছেন এবং তাতে কোনও বক্রতা নাই; একে করেছেন সুপ্রতিষ্ঠিত তাঁর কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য; এবং মুমিনগণ, যারা সৎকর্ম করে, তাদেরকে এই সুসংবাদ দেওয়ার জন্য যে, তাদের জন্য আছে উত্তম পুরস্কার, যাতে তারা চিরস্থায়ী হবে। ( সূরা কাহ্‌ফ, আয়াত-১-৩)

যারা ঈমান আনে এবং আমলে সালেহ করে তাদের আতিথ্যের জন্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস। (সূরা কাহ্‌ফ, আয়াত- ১০৭)

এবং যারা তাঁর নিকট উপস্থিত হবে মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে, তাদের জন্য আছে সমুচ্চ মর্যাদা; স্থায়ী জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাহারা স্থায়ী হবে এবং এই পুরস্কার তাদেরই, যারা পবিত্র। (সূরা ত্বহা, আয়াত ৭৫,৭৬)

যারা ঈমান আনে এবং আমলে সালেহ করে আল্লাহ তাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিচে বয়ে যায় নদী। আল্লাহ যা ইচ্ছা তা-ই করেন। (সূরা হজ্জ, আয়াত-১৪)

যারা ঈমান আনে এবং আমলে সালেহকরে আল্লাহ তাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিচে দিয়ে নদী বয়ে যায়। তাদেরকে সেখানে অলংকার পরানো হবে সোনার ও মুক্তার। তাদের পোশাক হবে রেশমি পোশাক। (সূরা হজ্জ, আয়াত-২৩)

অতএব, যারা ঈমান আনবে এবং আমলে সালেহ করবে, তাদের জন্য থাকবে মাগফিরাত এবং সম্মানজনক জীবিকা। (সূরা হজ্জ, আয়াত-৫০)

আর যারা ঈমান আনবে এবং আমলে সালেহ করবে– আমরা অবশ্যই বসবাসের জন্য জান্নাতে উঁচু প্রাসাদ দেবো। সেসবের নিচে নদী বয়ে যায়। চিরদিন থাকবে তারা সেখানে। কতো যে উত্তম প্রতিদান নেক আমলকারীদের জন্য। (সূরা আনকাবুত, আয়ত-৫৮)

যেদিন কিয়ামত হবে সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে। অতএব যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে তারা জান্নাতে থাকবে। (সূরা রুম, আয়াত- ১৪,১৫)

যারা ঈমান আনে ও আমলে সালেহ করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতুন নায়ীম। (সূরা লুকমান, আয়াত ৮)

যারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে তাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ তাদের আপ্যায়নের জন্য স্থায়ী বাসস্থান হবে জান্নাত। (সূরা সিজদাহ, আয়াত-১৯)

এর কারণ যারা ঈমান আনে এবং আমলে সালেহ করে তিনি তাদের পুরস্কার দেবেন এবং তাদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত ও সম্মানজনক রিজিক। (সূরা সাবা, আয়াত-৪)

যারা কুফুরি করে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব। আর যারা ঈমান আনে এবং আমলে সালেহ করে, তাদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত ও মহাপুরস্কার। (সূরা ফাতির, আয়াত-৭)

তুমি দেখবে এই যালিমরা তাদের কৃতকর্মের জন্য ভীত আতংকিত। অথচ তা (আল্লাহর আজাব) তাদের ওপর আপতিত হবেই। পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং আমলে সালেহ করেছে, তারা বসবাস করবে জান্নাতের মনোরম বাগ-বাগিচায়। তারা যা যা ইচ্ছা করবে তাদের প্রভুর কাছে সবই পাবে। এ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ অনুগ্রহ। (সূরা আশ শুরা, আয়াত-২২)

যারা ঈমান এনেছে এবং আমলে সালেহ করেছে, তাদের অবস্থা হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাদের প্রভু তাদের দাখিল করবেন তার রহমতে (জান্নাতে)। এটাই সুস্পষ্ট সফলতা। (সূরা জাসিয়া, আয়াত-৩০)

আর যারা ঈমান এনেছে এবং আমলে সালেহ করেছে আর মুহাম্মদের প্রতি যা (যে কিতাব) নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছে, আর এতো তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে মহাসত্য; তিনি তাদের থেকে দূর করে দেবেন তাদের মন্দ আমলগুলো এবং সংশোধন করে দেবেন তাদের অবস্থা। এর কারণ হলো, যারা কুফুরি করে তারা অনুসরণ করে মিথ্যা-বাতিলের। আর যারা ঈমান আনে তারা ইত্তেবা (অনুসরণ) করে তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ মহাসত্যের। এভাবেই আল্লাহ দৃষ্টান্ত দিয়ে থাকেন মানুষের জন্য। (সূরা মুহাম্মদ, আয়াত- ১-৩)

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাহাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে- যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। (সূরা মুহাম্মদ, আয়াত-১২)

আর যে আল্লাহ্‌র সামনে উপস্থিত হতে ভয় পায়, তার জন্য রয়েছে দু’টি জান্নাত। (সূরা আর রহমান, আয়াত-৬২)

অবশ্যই যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, এটাই মহাসাফল্য। ((সূরা বুরুজ, আয়াত-১১)

যেদিন তিনি তোমাদের জমা করবেন জমায়েতের দিন, সেটাই হবে হারজিতের দিন। যে কেউ ঈমান আনবে আল্লাহর প্রতি এবং আমলে সালেহ্ করবে, তার থেকে মুছে দেওয়া হবে তার পাপসমূহ এবং তাকে দাখিল করা হবে জান্নাতে, যার নিচে বয়ে যায় নদী। সেখানে থাকবে তারা চিরকাল; এটাই মহাসাফল্য। (সূরা তাগাবুন, আয়াত ৮-৯)

তবে তাদের নয়, যারা ঈমান আনে ও আমলে সালেহ্ করে। তাদের জন্যে রয়েছে এমন পুরস্কার, যা শেষ হবেনা কখনও। (সূরা ত্বীন, আয়াত-৬)

যারা ঈমান আনে ও আমলে সালেহ করে, তারা হলো সৃষ্টির সেরা। (সূরা বাইয়্যেনাহ, আয়াত-৭)

প্রত্যেকেরই একটি লক্ষ্য আছে; যা তার কর্মধারাকে পরিচালনা করে। অতএব তোমরা সৎকর্মে (নিজের সঙ্গে) প্রতিযোগিতা করো। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, আল্লাহ তোমাদের সবাইকে সমবেত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।  (সূরা বাকারা, আয়াত-১৪৮)

আর আল্লাহর পথে মুক্তহস্তে ব্যয় করো। (মুক্তহস্তে ব্যয় না করে) নিজের হাতে নিজের সর্বনাশ কোরো না। সৎকর্মে ক্রমাগত লেগে থাকো। কারণ আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৯৫)

তারপর আল্লাহ তাদের পৃথিবীতে পুরস্কৃত করেছেন এবং আখেরাতে পুরস্কৃত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত-১৪৮)

অধিকাংশ গোপন সলাপরামর্শই মানুষের কোনো কল্যাণে আসে না। তবে কেউ যদি গোপনে দানখয়রাত, সৎকর্ম বা মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দূর করে শান্তিস্থাপনের পরামর্শ দেয়, তবে তা নিশ্চয়ই ভালো। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কেউ যদি তা করে, তাহলে আমি তাকে মহাপুরস্কার দেবো। (সূরা নিসা, আয়াত-১১৪)

হে নবী! আমি তোমার ওপর সত্যবিধানসহ কিতাব নাজিল করেছি, যা পূর্বে নাজিল হওয়া কিতাবের সত্যতা প্রমাণকারী ও সংরক্ষক। অতএব আল্লাহর বিধান অনুসারে তুমি পূর্ববর্তী কিতাবিদের বিচার-মীমাংসা করো। যে সত্যবিধান তোমার কাছে এসেছে তা বাদ দিয়ে তাদের খেয়ালখুশি অনুসারে কাজ কোরো না। আমি তোমাদের প্রত্যেকের জন্যে (আলাদা) বিধান ও স্পষ্ট পথনির্দেশ প্রদান করেছি। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমাদের এক উম্মাহ বা জাতিতে পরিণত করতে পারতেন। (কিন্তু তিনি তা করেননি।) কারণ তিনি তোমাদের যে পথনির্দেশ ও বিধান দিয়েছেন, তার আলোকেই তোমাদের পরীক্ষা করতে চান। অতএব তোমরা সৎকর্মে (নিজেরসঙ্গে) প্রাণপণ প্রতিযোগিতা করো। শেষ পর্যন্ত তোমরা আল্লাহর দিকেই ফিরে যাবে। তখন তোমাদের মতভেদের বিষয়সমূহের ব্যাপারে আল্লাহ আসল সত্য প্রকাশ করবেন। (সূরা মায়েদা, আয়াত-৪৮)

কোনো জনপদ ধ্বংস করার আগে আমি সেখানকার বিত্তবান ও প্রভাবশালী লোকদের সৎকর্ম করার নির্দেশ দেই। কিন্তু ওরা আমার আদেশের অবাধ্য হয়ে অন্যায় ও জুলুমে লিপ্ত হয়। তখন ন্যায়সঙ্গতভাবেই আজাবের ফয়সালা হয়ে যায় এবং তারা ধ্বংস হয়। (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত-১৬)

যারা সাফল্যের সরলপথে চলে, আল্লাহ তাদের সৎপথের উপলব্ধি ও চলার ক্ষমতাকে ক্রমাগত বাড়িয়ে দেন (বাড়িয়ে দেন সৎকর্ম করার আকুতি)। সৎকর্ম তোমার প্রতিপালকের কাছ থেকে স্থায়ী পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য উত্তম, সুফল দানকারী হিসেবেও (শুধু পার্থিব লাভালাভের চেয়ে) অনেক ভালো। (সূরা মরিয়ম, আয়াত-৭৬)

আসলে যে সৎকর্ম করে, সে নিজের ভালোর জন্যেই তা করে। আর যে অপকর্ম করে, তার প্রতিফলও সে-ই ভোগ করবে। তোমার প্রতিপালক তাঁর বান্দাদের ওপর কখনো জুলুম করেন না। (সূরা হা-মিম-সেজদা, আয়াত-৪৬) 

আর নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্মশীল, তারা সৃষ্টির সেরা। (সূরা বাইয়েনাহ, আয়াত, আয়াত-৭)

সৎকর্মশীলরা পুরস্কৃত হবেন

আর হে নবী! যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীল তাদের সুসংবাদ দাও জান্নাতের, যার পাদদেশে থাকবে প্রবহমান ঝর্নাধারা। সেখানে যখন তাদের ফলফলাদি খেতে দেয়া হবে, তখন তারা আনন্দে বলবে, ‘হাঁ, দুনিয়ায় আমরা এ ধরনের ফলই খেতাম।’ সেখানে তাদের সঙ্গে থাকবে পবিত্র সাথিরা এবং সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। (সূরা বাকারা, আয়াত-২৫)

নিশ্চয়ই মুসলমান, ইহুদি, খ্রিষ্টান ও সাবেয়ীদের মধ্যে যারাই আল্লাহ ও মহাবিচার দিবসে বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে, তাদের সবার জন্যই প্রতিপালকের কাছে পুরস্কার রয়েছে। তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (সূরা বাকারা, আয়াত-৬২)

আর যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীল, আল্লাহ তাদের যথাযথ পুরস্কার প্রদান করবেন। আল্লাহ জালেমদের অপছন্দ করেন। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত-৫৭)

আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, তারা প্রবেশ করবে জান্নাতে, যার পাদদেশে থাকবে প্রবহমান ঝর্নাধারা। তাদের জন্য থাকবে পবিত্র সাথিরা, এক মহাসবুজের ছায়ায় শান্তি-সুখে থাকবে তারা চিরকাল। (সূরা নিসা, আয়াত-৫৭)

আর আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, তিনি তাদের ক্ষমা করবেন ও মহাপুরস্কার দেবেন। আর যারা সত্য অস্বীকার করবে এবং আমার বিধানকে মিথ্যা মনে করে অমান্য করবে, তাদের নিয়তি হচ্ছে জাহান্নামের আগুন। (সূরা মায়েদা, আয়াত-৯,১০)

এরপর আমি ইব্রাহিমকে ইসহাক ও ইয়াকুবের মতো সন্তান দিয়েছি। প্রত্যেককে সরলপথ দেখিয়েছি। এর আগে আমি নূহকেও সরলপথ দেখিয়েছি এবং তারই বংশধর দাউদ, সোলায়মান, আইয়ুব, ইউসুফ, মুসা ও হারুনকে সৎপথ প্রদর্শন করেছি। আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করি। (সূরা আনআম, আয়াত-৮৪)

আল্লাহর ওয়াদা সত্য! তোমাদের সবাইকে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে। মনে রেখো, তিনিই (মানুষকে) প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন। তিনি আবার তাকে সৃজন করবেন, যাতে করে বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলদের যথাযোগ্য পুরস্কার দিতে পারেন। আর যারা সত্য অস্বীকারে অনড় থাকবে, তাদের জন্য অপেক্ষা করবে ফুটন্ত আঠালো পানীয় আর যন্ত্রণাদায়ক আজাব। (সূরা ইউনুস, আয়াত-৪)

সৎকর্মশীলদের বৈশিষ্ট

আসলে যারা তাদের প্রতিপালকের (বিরাগভাজন হওয়াকে) ভয় করে, যারা তাঁর বাণীকে বিশ্বাস করে, যারা তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করে না, যারা তাঁর কাছেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে—এই বিশ্বাস নিয়ে কম্পিত হৃদয়ে অন্তর থেকে দান করে, তারাই সৎকর্মে (নিজেরসঙ্গে) আসল প্রতিযোগী, তারাই সৎকর্মে অগ্রগামী। (সূরা মুমিনুন, আয়াত-৫৭-৬১)

অবশ্য যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে এবং (স্বীয় কবিতায় সত্য প্রকাশের মধ্য দিয়ে) আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে এবং অত্যাচারিত হওয়ার পর (প্রতিবাদী কবিতা দ্বারা) তা প্রতিহত করে (তারা বিভ্রান্ত নয়)। তারা বিশ্বাস করে (তাদের প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতিতে) যে, জালেমরা সময় এলেই জানতে পারবে, তাদের পরিণতি কত করুণ! (সূরা শু’আরা, আয়াত-৫৭-৬১)

আলিফ-লাম-মীম। প্রজ্ঞাময় কিতাবের এ ঐশীবিধান সৎকর্মশীলদের জন্য (করুণাময়ের) রহমত ও পথনির্দেশনা। সৎকর্মশীলরা নামাজ কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে। তারা অন্তরের গভীর থেকে পরকালে জবাবদিহিতায় বিশ্বাস করে। তারা তাদের প্রতিপালকের হেদায়েতের পথে আছে আর সেজন্য তারাই অনন্ত কল্যাণলাভে ধন্য হবে। (সূরা লোকমান, আয়াত-২-৫)

(সত্যিকার সৎকর্মশীল হচ্ছে তারা) যারা তাদের মানত পূরণ করে এবং সেই দিনের ভয় করে, যেদিনের সর্বনাশ হবে সর্বগ্রাসী। তাদের প্রয়োজন যত বেশিই হোক না কেন তা থেকেই তারা অভাবী, এতিম ও বন্দিকে খাবার দান করে। (মনে মনে বলে) কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের জন্যই তোমাদের খাবার দিচ্ছি। তোমাদের কাছ থেকে এর কোনো প্রতিদান চাই না, এমনকি কৃতজ্ঞতাও নয়। (সূরা দাহর, আয়াত-৭,৮,৯)

সময়ের শপথ! (তাকাও মহাকালের দিকে। তাহলেই বুঝতে পারবে) বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীল ছাড়া প্রতিটি মানুষ অবশ্যই ক্ষতিতে নিমজ্জিত। বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে পরস্পরকে সত্যের পথে উদ্বুদ্ধ করে। আর (প্রতিকূলতার মুখে) ধৈর্যের (সঙ্গে পরিস্থিতি পরিবর্তন ও আত্মশুদ্ধির জন্য নিরলস প্রয়াস চালানোর) উপদেশ দেয়। (সূরা আসর, আয়াত-১-৩)

নর-নারীর সৎকর্মের পুরস্কার সমান

তারপর তাদের প্রতিপালক তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বলবেন, আমি কোনো সৎকর্মশীল নরনারীর কর্ম বিফল করি না। তোমরা একে অপরের পরিপূরক। তোমাদের সৎকর্মের পুরস্কার সমান। তাই যারা হিজরত করেছ, ঘরছাড়া হয়েছ, আল্লাহর পথে নির্যাতিত হয়েছ, যুদ্ধ করেছ বা নিহত হয়েছ, তাদের সব অপরাধ ক্ষমা করে দেবো। তারা প্রবেশ করবে জান্নাতে, যার পাদদেশে থাকবে প্রবহমান ঝর্নাধারা। এ আল্লাহর পুরস্কার। বস্তুত আল্লাহর পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত-১৯৫)

পুরুষ হোক বা নারী, বিশ্বাসী হয়ে যে-ই সৎকর্ম করবে, সে-ই জান্নাতে দাখিল হবে। তাদের প্রতি পরমাণু পরিমাণও অবিচার করা হবে না। (সূরা নিসা, আয়াত-১২৪)

সৎকর্মের রেকর্ড হচ্ছে

সুতরাং কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে ও সৎকর্ম করলে তার প্রতিটি উদ্যোগ ও শ্রমের পুরস্কার সে পাবে। কারণ তা যথাযথভাবেই রেকর্ড হচ্ছে। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত-৯৪)

যে পৃথিবীতে অণুপরিমাণ সৎকর্ম করেছে, সে তা দেখতে পাবে। আর যে অণুপরিমাণ অন্যায় করেছে, সে তা-ও দেখবে (সুস্পষ্টভাবে)। (সূরা জিলজাল, আয়াত-৭,৮)

রাসুল (স.) এর হাদিসে সৎকর্মের বিষয়ে কী বলা আছে-

সৎকর্ম আয়ু বাড়ায়। -সাওবান (রা), সালমান ফারসি (রা); তিরমিজী, মেশকাত, ইবনে মাজাহ

যে নিজের দম্ভ প্রকাশ করার জন্য কোনো সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাকে মহাবিচার দিবসে সবার সামনে লাঞ্ছিত করবেন। আর যে লোক-দেখানোর জন্য কোনো ভালো কাজ করবে, আল্লাহ তাকে মুনাফেকের কাতারভুক্ত করবেন। -জুন্দুব ইবনে আবদুল্লাহ (রা); বোখারী, মুসলিম

সত্যকথন আল্লাহর কাছে সৎকর্ম বা সাদাকা হিসেবে সবচেয়ে প্রিয়। -আবু হুরায়রা (রা); বায়হাকি

প্রত্যেকটি ভালো কাজই সৎকর্ম, সাদাকা বা দান বা সেবা। -জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা); বোখারী, মুসলিম

প্রতিবেশীকে উপহার হিসেবে যে-কোনো কিছু দেয়া সৎকর্ম বা সাদাকা। -আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

একজন মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তার সকল সৎকর্মের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি সৎকর্মের সওয়াব বা নেকি সে সবসময় পেতে থাকবে— ১. সদকায়ে জারিয়া অর্থাৎ যে স্থায়ী দান থেকে মৃত্যুর পরও মানুষ উপকৃত হয়। যেমন : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। (তাই মৃত্যুর আগেই নিজের এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি সেবামূলক কাজে ওয়াকফ করুন।) ২. (কথন, লিখন প্রকাশ বা বিতরণের মাধ্যম) প্রচারিত জ্ঞান (কোরআনের জ্ঞান এবং এমন পুস্তক, যা সঠিক জীবনদৃষ্টি প্রদান করে মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতে সাফল্যের সরলপথ দেখায়)। ৩. সুসন্তান (যে তার জন্যে দোয়া ও দান করে)। -আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম, আবু দাউদ

কখনো মৃত্যুকামনা করবে না। তুমি যদি সৎকর্মশীল হও তবে যতদিন কর্মক্ষম থাকবে, তোমার সৎকর্ম করার সুযোগ বাড়বে। আর যদি পাপী হও তবে তোমার অনুশোচনা করার সুযোগ থাকবে। (মৃত্যু এলে দুটো সুযোগই নষ্ট হয়ে যাবে।) -আবু হুরায়রা (রা); বোখারী

আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসুল! আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই— এই কথা বলা কি সৎকর্ম বা সাদাকা? নবীজীর (স) জবাব, অবশ্যই! আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) বলা অতি-উত্তম সৎকর্ম বা সাদাকা।- আবু যর গিফারী (রা); আহমদ, তারগিব

বিবাদের অবসান ঘটিয়ে শান্তি ও সমঝোতা স্থাপন সর্বোত্তম সাদাকা, দান বা সৎকর্ম। -আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা); তাবারানী, তারগিব

প্রতিদিন সূর্যোদয়ের পর প্রত্যেক আদমসন্তানের ওপরই দান বা সৎকর্ম করার দায়িত্ব বর্তায়। -আবু যর গিফারী (রা); ইবনে হিব্বান

প্রতিটি সৎকর্মই সাদাকা বা দান। হাসিমুখে কথা বলা সাদাকা। ভালো কাজে উৎসাহিত করা সাদাকা। খারাপ কাজ থেকে কাউকে বিরত রাখতে সচেষ্ট হওয়া সাদাকা। পথহারা মানুষকে পথ দেখানো সাদাকা। অসুস্থকে দেখতে যাওয়া সাদাকা। কাউকে পানি ঢেলে খাওয়ানোও সাদাকা। -আবু যর গিফারী (রা); তিরমিজী

দুনিয়ায় সৎকর্মশীলরা আখেরাতেও সৎকর্মশীল বলে বিবেচিত হবে। আর দুনিয়ায় জুলুমকারীরা আখেরাতেও জালেম হিসেবে গণ্য হবে। - কাবিসা ইবনে বুরমাহ (রা); মুফরাদ (বোখারী)

আল্লাহ কোনো বান্দার কল্যাণ চাইলে তিনি তাকে মৃত্যুর আগেই পরিশুদ্ধ করেন। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ কীভাবে মৃত্যুর আগে তাকে পরিশুদ্ধ করেন? নবীজী (স) বললেন, তিনি তাকে মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত সৎকর্ম অব্যাহত রাখতে উদ্বুদ্ধ করেন।- আবু উমামা (রা); মুজাম আল কবীর

আল্লাহ কারো ভালো কাজই ব্যর্থ হতে দেন না। বিশ্বাসী ব্যক্তি সৎকর্ম করলে আল্লাহ ইহকাল ও পরকাল— দুই কালেই এর পুরস্কার দেবেন। আর কোনো অবিশ্বাসী বা সত্য অস্বীকারকারীর ভালো কাজের প্রতিদান যা দেয়ার তিনি তাকে এই পৃথিবীতেই দেবেন।- আনাস ইবনে মালেক (রা); মুসলিম

মানুষের প্রত্যেকটি সৎকর্মের নেকি আল্লাহ গুণিতক করেন। ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি দান করেন। আর রোজার নেকি আল্লাহ নিজে দেবেন, কোনো সীমা ছাড়া, তাঁর ইচ্ছানুসারে। -আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম

একজন মানুষ বহু বছর সৎকর্ম করার পর পাপাচারে লিপ্ত হয়ে পড়তে পারে। আর পাপাচারী হিসেবেই মৃত্যুবরণ করতে পারে। আবার একজন বহু বছর পাপাচারে লিপ্ত থাকার পর সৎকর্মে একাত্ম হতে পারে এবং সৎকর্মশীল হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে পারে। -আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম

অল্প জীবনোপোকরণ পেয়েই যদি কেউ তৃপ্ত থাকে, তবে তার অল্পসল্প সৎকর্মেই আল্লাহ সন্তুষ্ট থাকবেন। -আলী ইবনে আবু তালিব (রা); বায়হাকি, তারগিব

আমার ভয় হয় তোমরা ছোট শিরক অর্থাৎ সৎকর্মের প্রদর্শনীতে জড়িয়ে পড়বে। -মাহমুদ ইবনে লাবিদ (রা); আহমদ 

আলস্য ও কর্মবিমুখতা যাকে পিছিয়ে দেয়, সৎকর্মে যে পিছিয়ে পড়ে, বংশপরিচয় তাকে কখনো এগিয়ে দেবে না। -আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম

এমএ/

আরও পড়ুন