ঢাকা, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

২৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

জনতা ব্যাংক থেকে ১৯৬৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ব্যাংকার প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০:৪৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২০:৪৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

জনতা ব্যাংক থেকে ১৯৬৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ১ হাজার ৯৬৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলায় ব্যাংকটির সাবেক দুই চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩৪ জনকে  আসামি করা হয়েছে।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। 

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন নামের ভুয়া প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র ব্যবহার করে জনতা ব্যাংক সাধারণ বীমা ভবন করপোরেট শাখা (চৌমুহনী) থেকে ১ হাজার ৯৬৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৫৯ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ঋণ অনুমোদন ও অর্থ ছাড়ের প্রতিটি ধাপে ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছিল।

দুদক বলছে, ঋণের শর্তাবলি লঙ্ঘন করে সুবিধাভোগীরা পরিকল্পিতভাবে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেন এবং ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা তাতে সহযোগিতা করেন। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জামালউদ্দিন আহমেদ ও এস. এম. মাহফুজুর রহমান, সাবেক সিইও ও এমডি মো. আব্দুস সালাম আজাদ, সাবেক পরিচালক খন্দকার সাবেরা ইসলাম, মোহাম্মদ আবুল কাশেম, অমিত কুমার পাল, কে. এম. সামছুল আলম, মোহাম্মাদ সামাদ উল্লাহ, ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ, মো. আবদুল মজিদ ও বেগম রুবানা আমীন, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা  পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার, মো. তাজুল ইসলাম, মো. ইসমাইল হোসেন ও শেখ মো. জামিনুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল আহসান, মাসফিউল বারী, মো. আশরাফুল আলম, মো. কামরুজ্জামান খান, এস এম আব্দুল ওয়াদুদ, মিতানূর রহমান ও মো. শামীম আলম কোরেশী এবং জনতা ব্যাংক পিএলসির সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল করিম মজুমদার, মো. শহীদুল হক ও মো. আবুল মনসুর।

এছাড়া এস আলম গ্রুপের মালিকসহ অন্য আসামিরা হলেন- গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশেদুল আলম, গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের পরিচালক ফারহানা বেগম ও মোহাম্মদ আবদুস ছবুর, এস আলম গ্রুপের মালিক ও এস আলম ট্রেডিং কোং (প্রা.) লিমিটেডের পরিচালক মো. সাইফুল আলম, এস আলম ট্রেডিং কোং (প্রা.) লিমিটেডের পরিচালক মো. ওসমান গনি, সোনালী ট্রেডার্সের মালিক মো. শহিদুল আলম, এন এন ইন্সপেকশন সার্ভিসের  ম্যানেজিং পার্টনার খন্দকার রবিউল হক  ও কমোডিটি ইন্সপেকশন সার্ভিসেস (বিডি) লিমিটেডের এমডি খন্দকার জহিরুল হক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার মাধ্যমে ঋণের লিমিট অনুমোদনপত্রের শর্তভঙ্গ করেছেন। নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ফান্ডেড লাইবেলিটি ও নন-ফান্ডেড লাইবেলিটি সৃষ্টি করা হয়েছে। একইসঙ্গে লোন ট্রাস্ট রিসিপ্ট ও লেটার অব ইনডেমিনিটি রিসিপ্টে সীমাতিরিক্ত দায় সৃষ্টি করে ঋণ প্রদান করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

অর্থ্যাৎ আসামিরা ব্যাংকিং নিয়ম লঙ্ঘন করে পরিকল্পিতভাবে চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংকের আগ্রাবাদে সাধারণ জীবন বীমা ভবন কর্পোরেট শাখা থেকে ১ হাজার ৯৬৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা লুটপাট করেছে। 

এএ

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন