ব্যাংকার প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪:৫১, ১৯ জুন ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৫১, ১৯ জুন ২০২৫
বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং বায়ুর মান উন্নয়ন দুটি নতুন প্রকল্পে মোট ৬৪০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। দেশীয় মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ৮২২ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে, উৎপাদনশীলতা উন্নত এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর (অন্তর্বর্তীকালীন) গেইল মার্টিন বলেছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়ানো এবং বায়ু দূষণ কমানো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক অগ্রাধিকার। গ্যাস সরবরাহের সীমাবদ্ধতা এবং শহুরে বায়ু দূষণের মূল কারণগুলো সমাধান করে, এই দুটি প্রকল্প বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে, উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।
অনুমোদিত দুটি প্রকল্পের মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে ‘জ্বালানি খাত নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রকল্পের’ জন্য। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল ও গ্যাস কোম্পানি পেট্রোবাংলার জন্য ব্যয় সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ তৈরি করে গ্যাস সরবরাহের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং এই প্রোগ্রামের টাস্ক টিম লিডার ওলাঙ্কা বিসিরিয়ু ইডেবিরি বলেন, এই প্রকল্পটি বাংলাদেশকে সাশ্রয়ী উপায়ে গ্যাস সরবরাহের নিরাপত্তা বাড়াতে সাহায্য করবে। যা শিল্প এবং গার্হস্থ্য ব্যবহারকারীদের জন্য নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী বিদ্যুতে অবদান রাখবে। নির্ভরযোগ্য গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে, প্রকল্পটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
দ্বিতীয় প্রকল্পটি হলো ‘বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প’, যার জন্য ২৯০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাংলাদেশে মারাত্মক বায়ু দূষণ মোকাবিলায় একটি ব্যাপক পদক্ষেপ নেবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ু মান পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক নতুন ও উন্নত স্টেশনগুলোর মাধ্যমে শক্তিশালী করা হবে। এটি বায়ু দূষণের প্রধান শিল্প উৎসগুলোর রিয়েল টাইম পর্যবেক্ষণের জন্য কন্টিনিউয়াস এমিশনস মনিটরিং প্রোগ্রাম চালু করতেও সহায়তা করবে।
প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো যানবাহনের নির্গমন নিয়ন্ত্রণ উন্নত করা এবং পুরোনো, দূষণকারী ডিজেল বাসের পরিবর্তে ৪০০টি শূন্য-নির্গমন বৈদ্যুতিক বাসের একটি বহর চালু করা।
এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি নতুন যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। দুটি অকার্যকর কেন্দ্রকে আপগ্রেড করা হবে এবং মোবাইল যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র ও ২০টি মোবাইল যানবাহন নির্গমন পরীক্ষা ইউনিট মোতায়েন করা হবে। পরিবহন খাতে এই সম্মিলিত পদক্ষেপগুলো বার্ষিক প্রায় ২ হাজার ৭৩৪ মেট্রিক টন প্রাথমিক পিএম২.৫ নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার আনা লুইসা গোমস লিমা বলেন, এটি দেশের বায়ু মানের উন্নতির জন্য নতুন প্রকল্পের একটি সিরিজের প্রথম হবে। যেহেতু বায়ু সীমানা অতিক্রম করে, কোনো একক দেশ একা বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই প্রকল্পটি বায়ু দূষণ কমাতে আঞ্চলিক সংলাপ এবং তথ্য আদান-প্রদান সহজ করবে।
এএ
ব্যাংকার প্রতিবেদন