ঢাকা, রোববার, ২২ জুন ২০২৫

৭ আষাঢ় ১৪৩২, ২৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা অর্থ বেড়েছে ৩৩ গুণ

ব্যাংকার প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৮:৩১, ২১ জুন ২০২৫ | আপডেট: ২০:০৫, ২১ জুন ২০২৫

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা অর্থ বেড়েছে ৩৩ গুণ

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশি ব্যক্তি ও ব্যাংকগুলোর রাখা জমা অর্থের পরিমাণ এক বছরের ব্যবধানে ৩৩ গুণ বেড়েছে। ২০২৩ সালে ১ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ফ্রাঁ (সুইজারল্যান্ডের মুদ্রা) জমা থাকলেও বছরের ব্যবধানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৫৮৯ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ—যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। 

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।

এসএনবি’র বার্ষিক ব্যাংকিং পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ব্যাংকের মাধ্যমে সুইস ব্যাংকে মাত্র ৩ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ জমা হলেও ২০২৪ সালে জমা হয়েছে ৫৭৬ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ফ্রাঁ। এই বিশাল অঙ্কের বেশির ভাগই এসেছে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে।

গত তিন দশকে এটিই পঞ্চম সর্বোচ্চ রেকর্ড এবং গত পাঁচ বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বশেষ ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি টাকা জমা হয়েছিল বাংলাদেশিদের নামে—৮৭১ দশমিক ১ মিলিয়ন ফ্রাঁ।

তবে এবারের প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, 'বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ড থেকে তেমন কিছু আমদানি করে না, তাই বাণিজ্যিক কোনো লেনদেনের মাধ্যমে এই পরিমাণ অর্থ জমা হওয়া সম্ভব নয়।'

তার মতে, এই লেনদেনগুলো হয়তো অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই হয়েছে। সরকারের পরিবর্তনের পর এমন বড় অঙ্কের টাকা স্থানান্তর সম্ভব নয় বলেই মন্তব্য তার।

জাহিদ হোসেনের মতে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। গণঅভুত্থানে আগস্টে সরকারের পতন হয়েছে। ধারণা করা যায়, ওই বছর অর্থ পাচার বাড়তে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত পরিসংখ্যানগুলো যাচাই করে এর পেছনের কারণ খুঁজে বের করা।

এসএনবির তথ্যে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি, এই অর্থের মধ্যে কোনো অবৈধ অর্থ আছে কি না। তবে এমন অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

এদিকে, সুইস ব্যাংকে ভারতের থাকা অর্থও আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। ভারতের নামে ২০২৩ সালে ছিল (পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাদে) ১০৩ কোটি ফ্রাঁ। ২০২৪ সালে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কোটি ফ্রাঁ।

অন্যদিকে পাকিস্তানের কাছে দায় কমেছে। পাকিস্তানের কাছে ২০২৪ সাল শেষে সুইস ব্যাংকগুলোর দায় ২৭ কোটি ফ্রাঁ। আগের বছর যা ছিল ২৯ কোটি ফ্রাঁ। তবে শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের কাছে সুইস ব্যাংকগুলোর দায় বেড়েছে।

প্রসঙ্গত,  সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গোপনীয়তার স্বার্থে সমস্ত ডেটা সমন্বিতভাবে প্রকাশ করে। আলাদাভাবে কোনো গ্রাহক বা ব্যাংকের তথ্য প্রকাশ করে না।

এএ

ব্যাংকার প্রতিবেদন

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন